Wikipedia

Search results

Growth Mindset

একা একা বসে আছে রবিন।তার মন খুব খারাপ।কারণ,বরাবরের মত পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে আসা রবিন এইবারের সেমিস্টার পরীক্ষায় উত্তীর্ণই হতে পারেনি।এর কারণ ছিল তার পারিবারিক কিছু সমস্যা।হতাশার এক পর্যায়ে তার মনে হয়, সে পিছিয়ে গেল।তার পক্ষে আর পড়ালেখা করা সম্ভব না।এইসব ভাবতে ভাবতে নিজের পাশে একটি মানুষের উপস্থিতি অনুভব করে সে।মাথা তুলে দেখে তারই ক্লাসমেট আকাশ।বসে কথা বলতে শুরু করে দুজনে।আকাশের সাথে কথাবার্তার এক পর্যায়ে সে তার সমস্যার কথা বলে।আকাশ বুঝতে পারে রবিন এখনো "ফিক্সড মাইন্ডসেটের মধ্যে আছে।তাই সে ফিক্সড মাইন্ডসেট থেকে বের হওয়ার ও গ্রোথ মাইন্ডসেট ডেভলপ করার উপায় বলে দেয় রবিনকে।
আজ আমরা জানব মাইন্ডসেট সম্পর্কে।মাইন্ডসেট ২ প্রকারের।
১. গ্রোথ মাইন্ডসেট
২. ফিক্সড মাইন্ডসেট
★ গ্রোথ মাইন্ডসেটঃ এই মাইন্ডসেটটির সবচেয়ে বড় সংজ্ঞা হল এটি সীমাবদ্ধ না।কোন একটি চিন্তায় সীমাবদ্ধ না থেকে তা ওভারকাম করে এগিয়ে যাওয়ার চিন্তাই হল গ্রোথ মাইন্ডসেট।
★ ফিক্সড মাইন্ডসেটঃ সহজ কথায় সীমাবদ্ধ চিন্তাভাবনাই ফিক্সড মাইন্ডসেট।
আমরা অনেকেই ফিক্সড মাইন্ডসেট নিয়ে বেড়ে উঠি।এর একটি বড় কারণ হল আমাদের সমাজ ব্যবস্থা।এতে আমাদের নিজেকে দোষ দেয়ার কিছু নেই।আমাদের উচিত যখনই আমরা অনুধাবন করতে পারি আমরা ফিক্সড মাইন্ডসেটে আছি তা থেকে তখনি বেরিয়ে আসার চেষ্টা করতে শুরু করা।এইযে আমি বললাম সমাজ ব্যবস্থার কারনে আমাদের অনেকেরই মাইন্ডসেট হয় ফিক্সড।এই চিন্তা করে যদি আমি মনে করি,
" আমি এই সমাজ ব্যবস্থায় জন্মগ্রহন করেছি,সুতরাং আমি এখান থেকে বেরোতে পারব না।তাই আমি ফিক্সড মাইন্ডসেটেই রয়ে যাব মনে হয়"।
এইযে এই চিন্তাটা এটাই ফিক্সড মাইন্ডসেট।কিন্তু আমি যদি মনে করি,
"আমি আমরা কর্ম দিয়ে সমাজের চিন্তাভাবনা বদলানোর কাজ শুরু করব"
তাহলে সেটা হবে গ্রোথ মাইন্ডসেট।
গ্রোথ মাইন্ডসেট তৈরী করার জন্য প্রথমেই আমাদের দরকার ধৈর্য।প্রচুর ধৈর্যের অধীকারি হতে হবে।ধৈর্যের গুন আত্মসাৎ করার জন্য মেডিটেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূৃমিকা রাখতে পারে।
গ্রোথ মাইন্ডসেট জীবনে কার্যকর করতে হতে হলে যে কাজগুলো করতে হবে ---
° প্রথমেই বলব কালকে করব বা একটু পরে করব, এইসব কথা বাদ দিতে হবে।Apply learning Immediately. জীবনে যা ই শিখবেন তা এখনই এপ্লাই করুন।(কোন আনইথিক্যাল কাজ বাদে 😁)
° আপনার একটি টার্গেট ঠিক করুন।টার্গেট ঠিক না থাকলে আপনি সেই বিষয়ে চিন্তা করবেন কিভাবে?
° একটি জার্নাল মেন্টেইন করুন।আপনার প্রতিদিনের কাজের বিবরণী লিপিবদ্ধ করুন।সেখান থেকে প্রতিদিনের ভূলগুলো চিহ্নিত করুন ও পরের দিন আরো বেটার করার চেষ্টা করুন।
° জীবনের ভূল থেকে শিক্ষা নিন।কখনোই ভূল হলে বা হেরে গেলে দমে যাবেন না।কি কারনে হারলেন তা খুঁজে বের করে তা ইমপ্রুভ করার চেষ্টা করুন।
° যদি কখনো কোন কাজে লিমিটেশন থাকে,তাকে বাধা হিসেবে না নিয়ে চ্যালেন্জ হিসেবে নিন।বাধা শব্দটি মনকে দমিত করে।কিন্তু চ্যালেন্জ উজ্জীবিত করে।মানুষ সবসময় জয় করতে চায়।চ্যালেন্জ হিসেবে নিলেই আপনার ভেতর জয় করার মানসিকতা তৈরী হবে।
° আপনার জীবনে প্রতিনিয়ত মানুষেরা ভূল করেই চলেছে।তাদের ভূলগুলো থেকে শিক্ষা নিন এবং তা জীবনে কাজে লাগান।
° কনফিডেন্ট হবেন, কিন্তু ওভারকনফিডেন্ট হবেন না।
° Alter Ego কে পরিহার করুন।
° Cognitive dissonance পরিহার করুন। ( Cognitive dissonance হল একটা কথা বলে তা না করা।এতে মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা পাওয়া যায় না।ফলে তা র্যাপো বিল্ড করতে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ও মাইন্ডসেট পরিবর্তন করে দেয়)
° আপনার কাজের ফিডব্যাক নিন।ফিডব্যাক না নিলে কাজের মূল্যায়ন বুঝতে পারবেন না।ফিডব্যাক নিয়ে তাতে যদি ভূল থাকে তা ইম্প্রুভ করার চেষ্টা করুন।মনে রাখবেন, "গঠনমূলক সমালোচনা কোন নিন্দা নয়"।
° কাজের সময় ডিসট্রাকশন এভোয়ন করুন।একটি গবেষণায় দেখা গেছে,যদি একটি কাজে একবার কেউ ডিসট্রাক্ট হয় তাহলে সেই কাজে আবার পুর্ণাঙ্গ মনোনিবেশ করতে তার "সাড়ে একুশ মিনিট" সময় লাগে।তাহলে বুঝতেই পারছেন ডিসট্রাকশন কতটা অপকারী।
° প্রতিদিন মেডিটেশন করুন ও ব্যায়াম করুন।এতে আমাদের শরীরের ৪ ধরনের হরমোণ নির্গত হয়।যা আমাদের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।আর কথাই বলে, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।হরমোনগুলো হল (ডোপামিন,অক্সিটোসিন,সেরোটোনিন,এন্ডোরফিন।) এনডোরফিন হরমোন নির্গমনের ফলে শরীরের কষ্ট দূর হয়।ফলে মস্তিস্ক ক্লিয়ারভাবে চিন্তা করতে পারে।
° ছোট থেকে শুরু করুন।কোন কিছু শুরু না করলে আপনি তা শেষ করবেন কিভাবে?তাই ছোট দিয়েই শুরু করূন।
° আপনার হয়ত অনেক হতাশা জীবনে কিছুই করতে পারলেন না।কিন্তু গভীরভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন আপনার জীবনেও ছোট ছোট কিছু সাফল্য আছে।সে তা যতই ছোট হোক না কেন।নিজের সেই সাফল্যগুলোর কারনে নিজেকে সাধুবাদ দিন।নিজেকে মোটিভেট করুন।
° প্রতিদিন কাজ শেষে আপনি নিজের জন্য একটি পুরস্কার রাখুন।ছোটখাট একটা পুরস্কার।হতে পারে সেটা একটা মুভি দেখা বা ভালো কিছু খাওয়া।এতে নিজের মনে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস জন্ম নেয় ও পুরস্কারের আনন্দ আমাদের নতুন উদ্যমে কাজ করার অনুপ্রেরণা দেয়।
° মাল্টিটাস্কিং থেকে বিরত থাকুন।এতে ডিস্ট্রাকশন সৃষ্টি হয়।
গ্রোথ মাইন্ডসেটের অধিকারী না হলে জীবনে এগিয়ে যাওয়া খুবই কঠিন।আর গ্রোথ মাইন্ডসেটের প্রধান কথাই হল, Apply learning immediately & Learn from feedback & fix those problem.
অবশেষে সবাই গ্রোথমাইন্ডসেটের অধিকারী হওয়ার অনুরোধ রইল।






No comments

Theme images by Mikey_Man. Powered by Blogger.