Wikipedia

Search results

কিভাবে নিজের পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করবেন?

Know Thyself
A brand is a promise

বাংলা কথায় নিজের ঢোল নিজে পিটানোকে আমরা পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং বলি।আমাদের সমাজব্যবস্থায় একটি চিন্তা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে যে নিজেকে নিজে ভালো বলা যাবে না অন্য মানুষ আমাকে ভালো বলতে হবে।এরই সাথে নিজের অর্জনগুলো পাবলিশ করলে তা শো অফ হিসেবে গণ্য করে অনেকে।কিন্তু এই ধারণাটি ভূল।
কখন একটি পণ্য বা সেবা ব্র্যান্ডে পরিণত হয়?
যখন সেই পণ্য বা সেবা তার গুণাগুণের দ্বারা মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
ব্র্যান্ডিং শব্দটির সাথে আমরা কমবেশি সবাই ই পরিচিত।ব্র্যান্ডিং অর্থ হল কোন পণ্য বা সেবার ভালো বা খারাপ দিককে হাইলাইট করা।ঠিক তেমনি পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং হল নিজেকে হাইলাইট করা বা উপস্থাপন করা।একে একটি ভাষায় "নিজের ঢোল নিজে পিটানো" বলে গণ্য করা হলেও এটি খুবই কার্যকরী।প্রফেশনাল ওয়ার্ল্ডে আপনার ক্রেডিবিলিটি দেখানোর জন্য আপনাকে পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করতে হবে।অন্যরা আপনাকে ব্র্যান্ড করার আগে নিজেকে ব্র্যান্ড করুন।

নিজেকে ব্র্যান্ডিং করার জন্য আপনি আপনার Strength & Major Sucess গুলো লিপিবদ্ধ করুন।হতে পারে সেটা ক্রিয়েটিভিটি,ভালো কমিউনিকেশন স্কিল,চিন্তা করার ক্ষমতা ইত্যাদি। আপনার মধ্যে কোন যোগ্যতা না থাকলে আপনি নিজেকে ব্র্যান্ডিং করবেন কি দিয়ে?

এবার নিজের Weekness & Major Failuers গুলো লিপিবদ্ধ করুন।খুঁজে বের করুন আপনি কেন সেই বিষয়গুলোতে দুর্বল?কেন আপনি পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছেন? এরই সাথে সেই পরাজয়কে কাটিয়ে উঠতে আপনি কি কি পদক্ষেপ নিয়েছেন? নিজেকে ব্র্যান্ডিং করার আগে আপনি নিজেকে নিজে খুব ভালোভাবে জানতে হবে।

পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করার জন্য আপনাকে সর্বপ্রথম নিজেকে জানতে হবে।আপনি আপনার ব্র্যান্ডিংয়ের মাধ্যমে কি আদায় করতে চান?হতে পারে সেটা

Money
Networking
Respect
Love

ব্র্যান্ডিংয়ের করার ৩ টি ধাপ হলো -

* আপনি কি চান? (Ambitation)
* আপনার অডিয়েন্স কারা? (Target Audience)
* আপনি কিভাবে আপনার অডিয়েন্সের মধ্যে ভ্যালু ডেলিভার করবেন? (Content Strategy)

সবার কাছে ব্র্যান্ডিংয়ের উদ্দেশ্য সমান নয়।তাই আপনি আপনার ব্র্যান্ডিংয়ের উদ্দেশ্য নির্বাচন করবেন এবং এরপর নির্বাচন করবেন আপনারা অডিয়েন্স কারা।মানুষ সাধারণত ২ ধরনের অডিয়েন্স পেয়ে থাকে।

* Massive Audience
* Inconsiderable Audience

কেউ কেউ বিশাল সংখ্যক অডিয়েন্স এর মধ্যে নিজেকে ব্র্যান্ডিং করতে চায়।কেউবা আবার সীমিত কিছু মানুষের মধ্যেই নিজেকে ব্র্যান্ডিং করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।সবাই নিশ্চয়ই সব কিছুতে আগ্রহী নয়।সেই সূত্র ধরে সবাই আপনার অডিয়েন্সও হবে না।তাই আপনাকে আপনার অডিয়েন্স নির্বাচন করতে হবে।আপনি কাদের মধ্যে নিজেকে ব্র্যান্ডিং করতে চান।অডিয়েন্স নির্বাচনের পরে আপনি কিভাবে তাদের মধ্যে ভ্যালু ডেলিভার করবেন তা জানতে হবে।এখানেই চলে আসছে আপনার Strength এর কথা। আপনি কোন বিষয়ে পারদর্শী ও সেই বিষয়ে নিজেকে ব্র্যান্ডিং করার  জন্য আপনার কাঙ্খিত অডিয়েন্স আছে কি না তা দেখতে হবে।উদাহরণ স্বরুপ বলতে পারি, Robi 10 Minute School এর প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিক।তিনি শিক্ষা ডেলিভার করার মাধ্যমে নিজের ব্র্যান্ডিং করছেন।তেমনি আপনি কিভাবে আপনার অডিয়েন্সকে ভ্যালু দিবেন তা ঠিক করতে হবে।আপনার কন্টেন্ট তৈরী করার ক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে আপনি নিজের ইচ্ছামত কন্টেন্ট তৈরী করলেই হবেনা।অডিয়েন্সের ইচ্ছা অনুযায়ী ৮০ ভাগ এবং আপনার ইচ্ছা  অনুযায়ী ২০ ভাগ তথ্য দিয়ে আপনাকে কন্টেন্ট তৈরী করতে হবে।

পার্সোনাল ব্র্যান্ডিং করার সময় আপনাকে নিজের ভবিষ্যত সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে।ভবিষ্যতে আপনি কোন ক্যারিয়ারে যেতে চান তা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে।কারন, ব্র্যান্ডিং এর সাথে পেশা ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত।তাই আপনার ক্যারিয়ার অনুযায়ীই আপনার অডিয়েন্স নির্ধারণ করতে হবে এবং সেইসাথে নিজের ইমেজ ও রেপুটেশন ভালো থাকতে হবে।

ব্র্যান্ডিং করার জন্য আপনাকে বুঝতে হবে আপনি কিভাবে মানুষের কাজে লাগছেন?মানুষের জন্য আপনার কিভাবে ভ্যালু তৈরী করছেন?আপনার USP (Unique Selling Proposition) কি?

বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির ফলে প্রায় আমরা সবাই ই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাথে সম্পৃক্ত।প্রযুক্তির সহায়তায় আপনি আপনার অর্জনগুলো প্রদর্শন করুন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ও প্ল্যাটফর্মে।যেমনঃ এ্যাওয়ার্ডস্, সার্টিফিকেট ইত্যাদি।

নিজের একটি প্রোমোশনাল চ্যানেলও  নির্ধারণ করে ফেলুন।হতে পারে সেটা ফেসবুক কিংবা ইউটিউব ইত্যাদি।সেই চ্যানেলে নিজেকে কন্টেন্টের মাধ্যমে প্রমোট করার জন্য কিছু নীতিমালা হলো ----

* আপলোড ফ্রিকুয়েন্সি - একটি ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন।
* টোন অফ কমিউনিকেশন - আপনার কন্টেন্ট ডেলিভারীর জন্য একটি টোন নির্ধারন করুন।
* ডিসট্রিবিউশন প্ল্যান - কিভাবে তা অডিয়েন্সে কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে গ্রহনযোগ্য করে তুলবেন তা ঠিক করুন।

যেহেতু এখন সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যেমেই বেশি ব্র্যান্ডিং করতে দেখা যায় সেহেতু একটি ভালো মানে প্রোফাইল পিকচার ও নিজের অরজিনাল নাম ব্যবহার করতে পারেন।

সবকিছু করার পরেও আপনি দেখলেন আপনি ব্র্যান্ডিং এ ফেইল করলেন।এর কারন হল আপনি কখনো ফিডব্যাক নেননি।নিজের কন্টেন্টগুলো শুধু ডেলিভার করলেই হবে না।সেগুলো থেকে ফিডব্যাক ও নিতে হবে।আরে কিছু কারণ হলো --

* Inconsistency - নিজের মাঝে কোন অসংগতি রাখা যাবে না।
* No Clear Purpose - প্রথমেই আপনার লক্ষ্য ঠিক করে নিতে হবে।বারবার আপনার লক্ষ্য বদলালে অডিয়েন্সের কাছে গ্রহনযোগ্যতা পাবেন না।
* Promise Is Broken - প্রথমেই বলেছি একটি ব্র্যান্ড অর্থ হল একটি প্রমিস।একটি ব্র্যান্ড কখনো সব বিষয় নিয়ে কথা বলে না।সে তারা প্রমিস নিয়েই তার লক্ষ্য ঠিক রেখে অগ্রসর হতে থাকে।
* Inauthentic/Fake - আশাকরি বুঝতেই পারছেন কখনো ফেইক হওয়া যাবে না।নিজের আসল পরিচয়টা দিয়েই নিজেকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে।

কখনো কোন কাজে সফল না হলে কাউকে দোষারোপ করা যাবে না এবং কোন প্রকার এক্সকিউজ দেখানো যাবে না।এতে নিজের ইমেজ ও রেপুটেশন  ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

আপনি যদি নিজের নিজস্ব কেন্দ্র এবং নিজের জন্য প্রেম খুঁজে না পান তবে অন্য কিছু কাজ করে না।আপনার ব্যক্তিগত ব্র্যান্ডটি আপনার ক্লায়েন্টদের কাছে প্রতিশ্রুতি।গুণমান, ধারাবাহিকতা, দক্ষতা এবং নির্ভরযোগ্যতার প্রতিশ্রুতি।





No comments

Theme images by Mikey_Man. Powered by Blogger.