Wikipedia

Search results

কিভাবে নিজের টাইম ম্যানেজ করবেন?

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছাত্র রিফাত।পড়ালেখার পাশাপাশি সে বিভিন্ন কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত।পড়ালেখার চাপ ও বিভিন্ন সংগঠনের সাথে যুক্ত থেকে সব কাজের জন্য সময় ম্যানেজ করা তার জন্য কঠিন হয়ে যায়।তাই প্রায়ই সে তার সকল কাজ সফলভাবে শেষ করতে পারে না।তার এই অনিয়মের অবস্থা তার এক শিক্ষকের দৃষ্টিগোচর হয়।তিনি রিফাতকে ডেকে তার সমস্যার কারন জানতে চান।প্রতিউত্তরে রিফাত তার সকল সমস্যার কথা বলে।সব শুনে তিনি বলেন সময়কে কখনোই ম্যানেজ করা যায়না ম্যানেজ করা যায় এনার্জিকে।টাইম ম্যানেজমেন্ট হল মূলত এনার্জি ম্যানেজমেন্ট।অর্থ্যাৎ তুমি তোমার কোন কাজটা কতটা এনার্জি দিয়ে ম্যানেজ করছ এবং তা কতটা কোয়ালিটিফুল হচ্ছে।টাইম কে আগাতে বা পিছাতে পারব তুমি?

রিফাতঃ না স্যার।

শিক্ষকঃ যদি টাইমকে অতিক্রম করে তা নিয়ন্ত্রনে নিয়ে ইচ্ছেমত পরিচালনা করা যেত সেটা হত টাইম ম্যানেজমেন্ট।কিন্তু আমরা তা পারিনা।আমরা পারি একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট কাজের উপর মনযোগকে কেন্দ্রীভূত করতে।

রিফাতঃ স্যার তাহলে আমরা যে রুটিন করি টাইমকে ম্যানেজ করার জন্য সেটা কি?

শিক্ষকঃ আমরা রুটিন করি কারন আমরা চিন্তা করে রাখি ঐ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আমরা কাজটি কারব।অর্থ্যাৎ ঐ সময়টাতে আমরা কাজটিতে মনযোগ দেব।এটিই হল এনার্জি ম্যানেজমেন্ট।টাইম ম্যানেজমেন্টের ক্ষেত্রে কাজের কোয়ালিটি ধরে রাখা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। Quality of work is very important for time management.You should perfect you work quality. 

রিফাতঃ স্যার আমার কাজের কোয়ালিটি কতটা সঠিক সেটা কিভাবে নির্ধারণ করব?

শিক্ষকঃ সূত্র হল কোয়ালিটি অফ ওয়ার্ক = টাইম স্পেন্ট × ইন্টেনসিটি অফ ফোকাস।
অর্থ্যাৎ ঐ কাজে কতটা সময় ব্যয় করেছ তাকে কাজে কতটা মনযোগ ছিল সেটা দিয়ে গুন করলে কাজের কোয়ালিটি পাওয়া যাবে।

রিফাতঃ স্যার অনেক সময় কাজের মাঝে মনযোগ হারিয়ে ফেলি।এজন্য কি করা যায়?

শিক্ষকঃ এই সমস্যার সমাধান একেক জনের জন্য একেকভাবে কার্যকর।তবে বহুল প্রচলিত একটি সমাধান হল Promodoro Technique.

রিফাতঃ স্যার আমি আমার টাইম ম্যানেজমেন্ট কিভাবে কাজে লাগাতে পারি?

শিক্ষকঃ ১. প্রতিদিনের টু-ডু লিস্ট তৈরী কর।হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়র একটি গবেষণায় দেখা দেখে যারা প্রতিদিনের টু-ডু লিস্ট তৈরী করত তাদের সফলতার হারই বেশি।সবচেয়ে ভালো হয় প্রতিদিন সকালে রাতে পরেরদিনের টু-ডু লিস্ট টা তৈরী করে রাখাটা।তাহলে পরেরদিন সকাল থেকে সুন্দরভাবে ফ্লো ধরে রেখে কাজ করা যায়।

২. টু-ডু লিস্টের পাশাপাশি নট টু-ডু লিস্টও তৈরী করে ফেল।কি কি করবে না সেটা জানা থাকাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। 

৩. প্রতিদিনের টু-ডু লিস্টে হয়ত অনেক কাজ থাকতে পারে।সেগুলোকে র‍্যাঙ্কিং করে ফেল।মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট টাস্ক (এমআইটি) ঠিক কর।যা ওইদিন না করলেই নয়।

৪. যদি মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট টাস্কের মধ্যেও কাজ বেশি থাকে তাহলে সেখান থেকে ৩-৫ টা মেজর টাস্ক সিলেক্ট কর।যা তোমাকে করতেই হবে এবং সেগুলো সম্পন্ন করার জন্য সময় নির্ধারণ কর।

৫. আমরা যাকে রুটিন বলি তা ই হল টাইম বক্সিং।অর্থ্যাৎ সময়কে বক্সের মধ্যে বন্দি করে ফেলা।কিন্তু সময়কে তো বন্দি করা যায়না।শুধু একটি নির্দিষ্ট কাজকে নির্দিষ্ট সময়ে করার জন্য নির্ধারণ করা যায়।আর তা ই হল টাইম বক্সিং।টাইম বক্সিং কর।

৬. ভবিষ্যত ৫ বছরের জন্য লক্ষ্য ঠিক কর।এরপর প্রতিদিনের টু-ডু লিস্ট বানানোর সময় খেয়াল কর যে তোমার লক্ষ্য অর্জনের জন্য তোমার টু-ডু লিস্টের কাজগুলো কতটা কার্যকরী।টু-ডু লিস্টের কাজগুলো কি লক্ষ্য অর্জনের জন্য সহায়ক?অনেক সময় ভবিষ্যতের প্ল্যান বর্তমান পরিস্থিতির কারনে ভেস্তে যায়।তাই Planning is more important than plan. নিজের লক্ষ্য পূরণ করার জন্য লক্ষ্য অর্জনের পথের পরিবর্তন হতে পারে যেকোন সময়।

৭. তোমাদের যুবসমাজের একটি সমস্যা হল তোমরা রাতে সজাগ থাক আর দিনে ঘুমাও।এজন্য তোমরা সময়কে ব্যবহার করতে পার না, বরং সময় তোমাদের ব্যবহার করে যায়।তাই সকালে ঘুম থেকে উঠার চেষ্টা কর।তাহলে দিনে হাতে সময় বেশি পাবে।সময়কে কাজে লাগাতে পারবে।

৮. গভীরভাবে কাজ কর।যেই কাজটাই করবে তা বাধাহীনভাবে করে যাবে।

৯. তোমার সুবিধামত সময়ে তোমার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো করার জন্য সময় নির্ধারণ কর।

১০. গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো একনাগারে কথা যাবে না।এতে মস্তিষ্কে চাপ সৃষ্টি হয়।মেজর কাজগুলোর মধ্যে ব্রিদিং টাইম রাখব।যাকে বলে বিশ্রামের সময়।

১১. দিনের কাজগুলো শেষ করার পর নিজের জন্য একটা পুরষ্কার রাখবা।এতে নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস বাড়ে।




No comments

Theme images by Mikey_Man. Powered by Blogger.