Wikipedia

Search results

লালটিঁপ

চেয়েছিলাম আমি তোমারই দিকে
অপূর্ব তোমার মুখখানা
তোমার জন্য পাগল আমি
আমায় ছেড়ে যেওনা।

গল্পটার শুরু অনেক আগে থেকেই।নিম্নবিও পরিবারের ছেলে শুভ।তার জীবনে শখ বলে কিছুই নেই।ছোট থেকেই কষ্টকে খুব কাছে থেকে দেখেছে সে।কষ্টগুলো তার কাছে এতটাই আপন হয়ে গেছে যে সে আনন্দ শব্দটা শুনলেও যেন তার এখন অদ্ভূত লাগে।

শুভ এবার অনার্স ২য় বর্ষে পড়ে।অনেক বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে সে আজও পড়ালেখায় টিকে রয়েছে।তার ইচ্ছা সে ভালো পড়ালেখা করে একদিন অনেক বড় হবে।কিন্তু দুর্ভাগ্য যেন শুভর নিত্যদিনের সঙ্গী।বিভিন্ন রকম সমস্যা প্রতিদিন তার সাথে লেগেই থাকে।
এভাবেই কাটছিল শুভ দিনগুলো।

সাধারনত তেমন কোন অনুষ্ঠানেই যায় না শুভ।কারন, তার হৈহুল্লোড় ভালো লাগে না।এর অবশ্য একটা বড় কারনও আছে।
যাইহোক, প্রতিদিনের মত আজও শুভ সকালের কাজকর্ম সেরে ভার্সিটিতে যায়।ভার্সিটিতে গিয়ে সে তার প্রয়োজনীয় ক্লাসগুলো করে।ক্লাস শেষে বাসায় যাওয়ার জন্য রওনা দেয় শুভ।তখন পিছন থেকে ডাক দেয়,
এই শুভ দাঁড়া....

পিছনে ফিরে দেখে তার বন্ধু অভি তাকে ডাকছে।অভি তার সবচেয়ে ভালো বন্ধু।শুভর সব বিপদে আপদে অভি সবসময় তার পাশে থাকে।বলতে গেলে এই অভিই শুভ একমাত্র বন্ধু।সময়ের চলমান গতিতে সবাই শুভর কাছ থেকে চলে গেলেও অভি শুভকে ছেড়ে যায়নি।

শুভ : কিরে অভি তুই না কোথায় বেড়াতে গিয়েছিলি?আসলি কবে?
অভি : আজ ভোরেই আসলাম।ইম্পরট্যান্ট একটা ক্লাস ছিল।আর তোকেও নিতে এসেছি।
শুভ: আমাকে? কোথায়?
অভি : আমার আন্টির ছেলের বিয়ে।
শুভ : কই আগে তো কিছু শুনিনি?
অভি : বিয়েটা হঠাৎ ই ঠিক হল।তাড়াতাড়ি বাসায় যা।রেডি হয়ে নে।
শুভ : দোস্ত কিছু মনে করিস না।আমি এসব বিয়ে টিয়ে তে যাই না তাতো তুই জানিস।
আমার ভালো লাগে না যেতে।তুই যা দোস্ত।
অভি : আমার আন্টির ছেলের বিয়ে আর তুই যাবি না?এটা কোন কথা?
আমি সবই জানি।কিন্তু পুরোনো কথা মনে রেখে কি লাভ বল?
ভূলে যা সব।আমার সাথে চল।সবকিছু ভূলে কিছুদিন রিলাক্স করতে পারবি।
শুভ : দোস্ত আমার ভালো লাগছে না রে।তুই যা প্লিজ।
অভি : না।তোকে ছাড়া আমি যাব না।তোকে যেতেই হবে।তোকে নেয়ার জন্য আমি এসেছি।আর তুই বলছিস যাবি না।এটা হইব না।তুই যাবি।
শুভ : আচ্ছা ঠিকাছে।তুই যা শুরু করছিস। যেতে তো হবেই।

এরপর অভির সাথে শুভ আন্টির বাড়িতে চলে এল।
কালই বিয়ে।
শুভ এর আগে কোনদিন অভির আন্টির বাড়িতে আসেনি।তাই একটু নার্ভাস ফিল করছে।
রাতের খাবার খেয়ে কোনরকমে রাতটা পার করল সে।
.
পরেরদিন সবাই ব্যাস্ত।কারন,আজ বিয়ে।
সময়মত সবাই মেয়ের বাড়ির দিকে রওনা হল।
প্রায় ৩ ঘন্টা পর পর সবাই মেয়েদের বাড়িতে পৌঁছাল।

সবাই নেমে যে যার মত ব্যাস্ত হয়ে গেল।অভি কিছুক্ষণ শুভর সাথে থেকে সে ও একটু কাজে জড়িয়ে গেল।
অবশ্য এতে শুভর কোন মনেকষ্ট নেই।কারন, ওর ভাইয়ের বিয়ে।কিছু দ্বায়িত্ব তো আছেই।

শুভ একা একা ঘুরতে থাকে এদিক সেদিক।ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ শুভ থমকে দাঁড়ায়।

শুভ দেখতে পায় তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে লালটিঁপ পরা একটি মেয়ে।যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না সে।তার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অবন্তী।
কিন্তু অবন্তী এখানে কেন?
এরকম অনেক ভাবনা ভাবতে ভাবতেই সেখান থেকে চলে যায় শুভ।

খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাড়ির এককোনে দাঁড়িয়ে আছে শুভ।
হঠাৎ অবন্তী দেখতে পায় শুভকে।শুভকে দেখে অনেক অবাক হয়েছে অবন্তী।এগিয়ে আসে শুভর দিকে।

- তুমি এখানে?
- বন্ধুর ভাইয়ের বিয়ে।
- ও। আমাকে দেখে অবাক হওনি?
- প্রথমবার হয়েছিলাম।এখন আর হইনি।
- কেমন আছ?
- যেমন থাকার।
- রাগটা এখন আছে?
- হয়ত।
- আমার ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞেস করলে না?
- নতুন কিছু জানার ইচ্ছে নেই।
- অনেক বদলে গেছ তুমি শুভ।
- বদলানো দরকার নয় কি?
- ভালো থেকো।পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও।
চলে যাচ্ছে অবন্তী....
(চুপ করে থাকে শুভ।নিজের ভেতরের কষ্টগুলোকে সে শান্ততা দিতে চায়।কিন্তু কষ্টগুলো যেন পানি হয়ে চোখ দিয়ে বেরিয়ে আসতে চাইছে।
মনে পড়ে যায় সেই ৫ বছর আগের কথা।সামান্য একটা কারনে ভূল বুঝে অবন্তী চলে গিয়েছিল শুভকে ছেড়ে।
কতই না ভালোবাসতো শুভ অবন্তীকে।কিন্তু কেন যে অবন্তী তা বুঝতে পারল না।
আজ আবার হঠাৎ অবন্তীকে দেখে শুভর সেই ভালোবাসাটা জেগে উঠেছে।কিন্তু অবন্তীর উপর অনেক অভিমান জমে আছে তার।একবার অনেক কষ্ট পেয়েছে শুভ।এখন অাবার কষ্ট পেতে চায়না সে।কিন্তু এভাবে কি অবন্তী কে চলে যেতে দিবে সে।
অবন্তীকে তো সে এখনো ভালোবাসে।তাহলে কেন যেতে দিবে।

সব কথা ভেবে শুভ বলল,

- লালটিঁপে তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে।
- লাগলেই বা কি?
- আর ছেড়ে যাবে না তো আমায়?
- ছেড়ে যেতে দিওনা।
.
আবার দুজন দুজনের ভালবাসার পরশ পায়।পূর্ণতা পায় আরেকটি ভালোবাসা।

Dedicated By : Ruponti Nandi

No comments

Theme images by Mikey_Man. Powered by Blogger.